কেপলারের তিনটি সূত্র কী ছিল

কেপলারের তিনসূত্র
আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের অন্যতম পথপ্রদর্শক হলেন জোহানেস কেপলার। তিনি ছাত্রাবস্থা থেকেই কোপারনিকাসের সূর্যকেন্দ্রিক ব্রহ্মাণ্ডের তত্ত্বের সমর্থক ছিলেন। তিনি তাঁর বিচক্ষণতা, পর্যবেক্ষণ ও গাণিতিক বিশ্লেষণের দ্বারা গ্রহনক্ষত্র সম্পর্কিত তিনটি সূত্রের ব্যাখ্যা দেন, তা হল-
(1) প্রথম সূত্র: কেপলার প্রথমে একটিমাত্র বক্ররেখা দ্বারা গ্রহসমূহের কক্ষপথকে তুলে ধরার চেষ্টা শুরু করেন। তিনি সূর্য থেকে মঙ্গল গ্রহের দূরত্ব এবং সঠিক কক্ষপথ আবিষ্কার করেন। প্রথমে তাঁর ধারণা হয়েছিল যে, মঙ্গলের কক্ষ দুই মুখবন্ধ ডিম্বাকৃতির একটি বক্ররেখা। পরে তিনি উপবৃত্ত অবলম্বনে গণনা করে সিদ্ধান্তে পৌঁছান। তিনি জানান যে, সূর্যকে কেন্দ্রস্থলে (Focus)-এ রেখে গ্রহগুলি উপবৃত্তাকার পথে পরিক্রমা করে। এটি কেপলারের First Law বা প্রথম সূত্র নামে খ্যাত। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, কোপারনিকাস গ্রহগুলির বৃত্তাকার কক্ষপথের কথা বলেছিলেন। আবার একাদশ শতকে টলেডোর আর্জাচেল (Arzachel বা al-Zarqallun) মঙ্গল গ্রহের উপবৃত্তাকার কক্ষপথের ধারণা প্রদান করলেও, তা প্রমাণ করতে পারেননি। কেপলারই প্রথম যুক্তি দিয়ে দেখান যে, পৃথিবী-সহ সমস্ত গ্রহগুলিই সূর্যের চারপাশে উপবৃত্তাকার কক্ষপথে আবর্তিত হচ্ছে।
(2) দ্বিতীয় সূত্র: কেপলার লক্ষ করেন যে, সূর্য থেকে গ্রহের দূরত্ব যখন সবচেয়ে কম তখন তাদের গতি সবচেয়ে বেশি। দূরত্ব বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গ্রহের গতিবেগ হ্রাস পেতে থাকে। গাণিতিক বিশ্লেষণ দ্বারা তিনি ঘোষণা করেন যে, একই সময়ের ব্যবধানে গ্রহের যে-কোনো অবস্থানে সূর্য থেকে গ্রহ পর্যন্ত সংযুক্ত সরলরেখা একই ক্ষেত্রফল তৈরি করে। এটি হল তাঁর Second Law বা দ্বিতীয় সূত্র।
(3) তৃতীয় সূত্র: এ ছাড়া বিভিন্ন গ্রহের পারস্পরিক দূরত্বের মধ্যে একটি আঙ্কিক অনুপাত আছে বলে কেপলার বিশ্বাস করতেন। এর ভিত্তিতে তাঁর Third Law বা তৃতীয় সূত্রে বলা হয়, একটি গ্রহের আবর্তনকালের বর্গ সূর্য থেকে তার গড় দূরত্বের ঘনফলের সমানুপাতিক।