তেলেনাপোতা আবিষ্কার বড় প্রশ্ন উত্তর Class 11

Table of Contents

তেলেনাপোতা আবিষ্কার বড় প্রশ্ন উত্তর

তেলেনাপোতা আবিষ্কার বড় প্রশ্ন উত্তর
তেলেনাপোতা আবিষ্কার বড় প্রশ্ন উত্তর

“…তাহলে হঠাৎ একদিন তেলেনাপোতা আপনিও আবিষ্কার করতে পারেন।”- তেলেনাপোতা আবিষ্কারের বাসনা কীভাবে জাগতে পারে? তেলেনাপোতা আবিষ্কারের শর্তগুলি কী কী?

আবিষ্কারের বাসনা : প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ প্রকৃতপক্ষে এক মানস ভ্রমণকাহিনি। মহানগর কলকাতার কর্মব্যস্ততায় হাঁফিয়ে ওঠার মুহূর্তে যদি দুদিনের ছুটি পাওয়া যায় এবং ঠিক তখনই কেউ এসে যদি অজানা এক গ্রামের আশ্চর্য সরোবরের কথা বলে, যে সরোবরের মাছেরা এখনও কারওর দ্বারা বড়শিবিদ্ধ হয়নি। গল্পনায়কের মতো আনাড়ি মৎস্য শিকারিকে সেই সরোবরে মাছ ধরতে প্রলুব্ধ করে, তবেই তেলেনাপোতা আবিষ্কারের বাসনা জাগতে পারে।

আবিষ্কারের শর্ত : তেলেনাপোতা আবিষ্কারের জন্য কিছু শর্তের কথা উল্লেখ করেছেন গল্পকথক-

প্রথমত: শনি বা মঙ্গলবারের মধ্যে, বিশেষত মঙ্গলবারেই তেলেনাপোতা আবিষ্কার সম্ভব হতে পারে।

দ্বিতীয়তঃ যাওয়া ও আসার জন্য দুদিনের ছুটি লাগবে।

তৃতীয়ত: তেলেনাপোতায় যেতে হলে দুজন সঙ্গী থাকা দরকার।

চতুর্থত : তেলেনাপোতা আবিষ্কারের জন্য একজনকে বিশেষভাবে মৎস্যশিকার বিষয়ে ফুসলানি দিতে হবে।

পঞ্চমত: মৎস্যশিকারের জন্য উদ্‌গ্রীব থাকতে হবে।

ষষ্ঠত : তেলেনাপোতা আবিষ্কারের জন্য মাছ ধরার বিষয়ে বিশেষ কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নেই।

সপ্তমত : বিকেল বেলার পড়ন্ত রোদে জিনিসে-মানুষে ঠাসাঠাসি একটা বাসে গিয়ে উঠতে হবে।

অষ্টমতঃ রাস্তার ঝাঁকুনির সঙ্গে মানুষের গুঁতো খেতে খেতে ভাদ্র মাসের গরমে ঘামে-ধুলোয় চটচটে শরীর নিয়ে আচমকা বাস থেকে একটি নীচু জলা জায়গায় নেমে পড়তে হবে।

উক্ত শর্ত মেনে চলতে পারলেই কোনো-এক বিশেষ লগ্নে যে কেউ তেলেনাপোতা আবিষ্কারে সক্ষম হবে।

“নিবিড় অনাদি অনন্ত স্তব্ধতায় সব কিছু নিমগ্ন হয়ে আছে; জাদুঘরের নানা প্রাণীদেহ আরকের মধ্যে যেমন থাকে।”- প্রসঙ্গ উল্লেখ করে আলোচ্য অংশটির তাৎপর্য ব্যাখ্যা করো। 

প্রসঙ্গ : প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে মহানগরীর কর্মব্যস্ততায় হাঁপিয়ে ওঠা তিন বন্ধু, কিছুটা আকস্মিকভাবেই কোনো-এক অপরাহ্নের পড়ন্ত রোদে, ভিড় বাসে রাস্তার ঝাঁকুনি আর মানুষের গুঁতো খেতে খেতে, ভাদ্রের গরমে ঘাম ও ধুলোর চটচটে শরীর নিয়ে ঘণ্টা দুয়েক পর তেলেনাপোতার কাছাকাছি একটি বাস স্টপেজে নামেন। তারপর জলার কাছাকাছি স্যাঁতসেঁতে আবহাওয়া ও মশার কামড় সহ্য করে কিছুক্ষণ অপেক্ষার পর আবছা অন্ধকারে জঙ্গলের ভিতর থেকে ধীর লয়ে গোরুর গাড়ির এক সংক্ষিপ্ত সংস্করণকে আসতে দেখেন। সেই গো-শকটের ছইয়ের মধ্যে কোনোরকমে কথকরা তিনজনে ঠাঁই করে নেন। ঘনান্ধকার সুড়ঙ্গের মতো অরণ্যপথ ধরে শুরু হয় তাদের পথচলা। ক্ষুদ্র গো-শকটে তাঁদের এই অভিযানের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিতে গিয়ে গল্পকথক আলোচ্য উক্তিটি করেছেন।

তাৎপর্য : সেই গহন অন্ধ অরণ্যপথে ক্রমে এক অবসন্ন অবস্থায় আচ্ছন্ন হন কথকরা। বহির্জগৎকে মনে হয় অনুভূতিহীন কুয়াশাময় এক সত্তা, সময় যেখানে নিস্পন্দ, নিশ্চল। কৃষ্ণপক্ষের চাঁদের আলোয় তারা দেখতে পান দু-পাশে আবছা প্রাচীন অট্টালিকা, ভগ্ন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ মহাকালের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে। জাদুঘরে নানা প্রাণীদেহ বছরের পর বছর ধরে আরকের মধ্যে যেমন তাদের পরিচয়ের চিহ্নটুকু বাঁচিয়ে রাখে, এখানকার জড়-অজড় সমগ্র সত্তা তেমনিই যেন নিবিড় অনন্ত স্তব্ধতায় নিমগ্ন।

তেলেনাপোতার মায়াবী রাতে গল্পের নায়ক কীভাবে যামিনীর প্রথম দর্শন পেলেন তা আলোচনা করো।

অথবা, “মনে হবে এই ধ্বংসপুরীর অতল নিদ্রা থেকে একটি স্বপ্নের বুদবুদ ক্ষণিকের জন্য জীবনের জগতে ভেসে উঠে আবার মিলিয়ে গিয়েছে।”-কার, কোন্ পরিস্থিতিতে এরকম মনে হবে? কেন এরকম মনে হবে?

যামিনীর প্রথম দর্শন : প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ নামক কল্প ভ্রমণকাহিনির নায়ক চরিত্র তার দুই বন্ধুকে নিয়ে ঘনান্ধকার অরণ্যপথে বাধাবিপত্তি অতিক্রম করে শেষ পর্যন্ত অনেক রাতে পৌঁছোন অভীষ্ট স্থানে। একটি পানাপচা পুকুরের পাশে ভগ্নপ্রায় অট্টালিকার কোনো-একটি অপেক্ষাকৃত বাসযোগ্য ঘরে তাদের রাত্রিবাস।

ঝুল, জঞ্জাল, ভাপসা গন্ধ, মশার আতিথ্য সবকিছু উপেক্ষা করে নায়কের দুই বন্ধু ঘরটিতে নিজেদের ব্যবস্থা করে নিয়েছেন। কিন্তু নায়কের চোখে ঘুম নেই। রাত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মশাদের ঘনিষ্ঠতা ও শোণিত সম্পর্কও সমানুপাতিক হারে বেড়ে চলে। ফলে নায়ক বাধ্য হলেন শয্যা ত্যাগ করতে। গুমোট গরমে আবদ্ধ ঘরে থাকতে না পেরে টর্চ হাতে ভগ্নপ্রায় সিঁড়ি বেয়ে, ক্রমান্বয়ে ধসে পড়া ইট-বালির বিপর্যয় অতিক্রম করে তিনি ছাদে উঠলেন। ছাদের প্রাচীর অধিকাংশই ভাঙা, ছাদ থেকে বিভিন্ন গাছের শিকড় অট্টালিকার প্রান্ত পর্যন্ত পৌঁছে গেছে। ইতোমধ্যে কৃষ্ণপক্ষের ক্ষীণ আলোয় মোহময় হয়ে উঠেছে সমস্ত পরিবেশ। এরই মধ্যে অকস্মাৎ সংকীর্ণ রাস্তার অপর প্রান্তের দৃশ্যমান ভগ্নস্তূপের কোনো-একটি জানলায় আলোর রেখা আড়াল করে এক বাতায়নবর্তিনীর অস্পষ্ট ছায়া দেখে চমক লাগে তার মনে। যদিও মুহূর্তের মধ্যে অদৃশ্য হয়ে যায় সে ছায়ামূর্তি। বিমূঢ় ভাব কেটে গেলে নায়কের মনে হয় এ হয়তো তার মনের ভুল। পরের দিন সকালে অবশ্য তিনি বুঝতে পারলেন বাতায়নবর্তিনী নিছক তার মনের ভুল ছিল না, সে আসলে যামিনী নামক এই রমণী যার গৃহে তারা অতিথি।

“পুকুরের ঘাটের নির্জনতা আর ভঙ্গ হবে না তারপর।”-পুকুর ঘাটের নির্জনতার পরিচয় দিয়ে সেই নির্জনতায় নায়কের মৎস্য শিকারের ব্যর্থতা সম্পর্কে আলোচনা করো।

অথবা, “খানিক আগের ঘটনাটা আপনার কাছে অবাস্তব বলে মনে হবে।”-এখানে যে ঘটনার প্রসঙ্গ উল্লিখিত হয়েছে তার সবিস্তার পরিচয় দাও।

অথবা, ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্প অবলম্বনে গল্পের নায়ক চরিত্রের সঙ্গে যামিনীর প্রথম সাক্ষাৎ দৃশ্যটির পরিচয় দান করো।

পুকুরঘাটের নির্জনতা : প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নায়ক চরিত্র তার দুই বন্ধুসহ তেলেনাপোতায় যান মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে। সকালে ঘুম ভাঙার সঙ্গে সঙ্গে মাছ ধরার যাবতীয় প্রস্তুতি সেরে কথক একটা শ্যাওলা ঢাকা ভাঙা ঘাটের একধারে বসে সবুজ জলের মধ্যে মাছের খাবার (চার)-সহ বড়শি ফেলে অপেক্ষা করতে থাকেন। চারিদিকে নিস্তব্ধতা। তারই মাঝে নিকটবর্তী ঝুঁকে পড়া একটি বাঁশের ডগা থেকে একটা মাছরাঙা পাখি মাঝেমধ্যেই জলে ডুব দিয়ে মাছ শিকার করে আবার স্বস্থানে ফিরে যায় এবং বিচিত্র স্বরে নায়ককে যেন উপহাস করতে থাকে।

মৎস্য শিকারে নায়কের ব্যর্থতা: এই নির্জনতার মাঝে হঠাৎই জলের ঢেউয়ে ফাতনা নড়তে দেখে নায়কের সংবিৎ ফেরে। ঘাড় ঘুরিয়ে তিনি দেখেন একটি মেয়ে পুকুরের পানা সরিয়ে ঝকঝকে একটি পিতলের কলশিতে জল ভরছে। মেয়েটি কৌতূহলী হলেও অযথা আড়ষ্টতা নেই তার মধ্যে। কলশি *নিয়ে ফিরে যেতে গিয়ে বিমূঢ় নায়ককে সে বড়শিটায় টান দিতে বলে। এক অপরিচিতের সঙ্গে মেয়েটির এরকম স্বতঃপ্রণোদিতভাবে কথা বলায় নায়ক বিস্মিত হন। চমক ভাঙলে ডুবে যাওয়া ফাতনা ভেসে ওঠার পর তিনি দেখেন বড়শিতে টোপ আর মাছ কিছুই নেই। খানিকটা অপ্রস্তুত হয়ে ফিরে তাকাতেই তিনি দেখলেন মেয়েটি শান্ত ধীর পদে ঘাট ছেড়ে চলে যাচ্ছে। তারপর আর পুকুর ঘাটের নির্জনতা ভাঙেনি, মাছরাঙা পাখিটাও চলে গেছে। কিছু আগের ঘটে যাওয়া ঘটনাটা নায়কের কাছে কেমন অবাস্তব মনে হতে শুরু করে। পরে জানতে পারলেন, যামিনী নামক এই রমণীর গৃহেই তারা অতিথি। এভাবেই যামিনীর সঙ্গে গল্পের নায়কের প্রথম সাক্ষাৎ হয়।

“তাদের পরিহাসে ক্ষুণ্ণ হয়ে এ কাহিনি কোথায় তারা শুনল, জিজ্ঞাসা করে হয়তো আপনার পানরসিক বন্ধুর কাছে শুনবেন…।”-কারা, কেন পরিহাস করে? গল্পের নায়ক পানরসিক বন্ধুর কাছে কী শুনলেন? তখন তাঁর মনের অবস্থা কী হয়?

পরিহাসকারী ও পরিহাসের কারণঃ প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নায়ক চরিত্র তেলেনাপোতা গ্রামে এসে, সকালে ঘুম থেকে উঠে পড়েন। তারপর মাছ ধরার সমস্ত আয়োজন সম্পন্ন করে একটা শ্যাওলা ঢাকা ভাঙা ঘাটের একধারে বসেন এবং সবুজ জলের মধ্যে মাছের চারসহ বড়শি ফেলে অপেক্ষা করতে থাকেন। নির্জনতার মাঝে হঠাৎই জলের ঢেউয়ে ফাতনা নড়তে দেখে তিনি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখেন একটি মেয়ে পুকুরের পানা সরিয়ে ঝকঝকে একটি পিতলের কলশিতে জল ভরছে। মেয়েটির মধ্যে কৌতূহল থাকলেও কোনো আড়ষ্টতা নেই। বিস্মিত নায়ককে আরও বিমূঢ় করে মেয়েটি চলে যাওয়ার আগে তাকে বড়শিতে টান দিতে বলে। সংবিৎ ফিরে পেলে গল্পের নায়ক দেখলেন বড়শিতে টোপ আর মাছ কিছুই নেই। নায়কের মাছ শিকারের এই সাফল্য নিয়েই তার বন্ধুরা পরিহাস করছিলেন।

গল্পের নায়ক মা শুনলেন: পানরসিক বন্ধুটির কাছ থেকে গল্পের নায়ক জানতে পারলেন, তার এই কর্মকুশলতা যামিনী নিজে দেখে এসেছে। যামিনী হল নায়কেরই পানরসিক বন্ধুর জ্ঞাতিস্থানীয়া, পুকুর ঘাটের সেই অবাস্তব করুণ নয়না মেয়েটি।

এই যামিনীদেরই কোনো-একটি ঘরে তাদের মধ্যাহ্নভোজের আয়োজন হয়েছে।

নায়কের মনের অবস্থা : নায়ক বুঝতে পারলেন, গতরাতে কৃষ্ণপক্ষের মায়াবী আলোয় রাস্তার ওপারে একটি ভগ্ন ঘরের বাতায়নে যে রমণীর ছায়াময় উপস্থিতি তিনি দেখেছিলেন সে আসলে এই যামিনীই। মেয়েটির চোখে-মুখে সুদীর্ঘ ক্লান্তি জনিত গাম্ভীর্য, দীর্ঘ অপুষ্টিতে শরীর যৌবনের লাবণ্যহীন। রাতের মায়াবরণ সরে গিয়ে বাস্তব এতটা রূঢ় ও জীর্ণ হতে পারে তা তিনি ভাবতে পারেননি।

‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নায়ক চরিত্র যামিনীর প্রকৃত পরিচয় কীভাবে জানতে পারেন? নায়ক ও তার বন্ধুদের মধ্যাহ্নভোজের অভিজ্ঞতাটি বর্ণনা করো।

যামিনীর পরিচয় জানতে পারা: প্রেমেন্দ্র মিত্রের ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নায়ক চরিত্র সকালে মাছ ধরার যাবতীয় সরঞ্জাম গুছিয়ে নিয়ে একটা শ্যাওলা ঢাকা ভাঙা ঘাটের একধারে গিয়ে বসেন এবং সবুজ জলের মধ্যে মাছের চারসহ বড়শি ফেলে অপেক্ষা করতে থাকেন। একটা মাছরাঙা পাখির ব্যস্ততা ছাড়া চারিদিক নিস্তব্ধ। হঠাৎই জলের ঢেউয়ে ফাতনা নড়তে দেখে তিনি ঘাড় ঘুরিয়ে দেখলেন একটি মেয়ে পুকুরের পানা সরিয়ে ঝকঝকে একটি পিতলের কলশিতে জল ভরছে। মেয়েটির মধ্যে কৌতূহল থাকলেও কোনো আড়ষ্টতা নেই। বিস্মিত নায়ককে আরও বিমূঢ় করে মেয়েটি চলে যাওয়ার আগে তাকে বড়শিতে টান দিতে বলে। সংবিৎ ফিরে পেলে গল্পের নায়ক দেখলেন বড়শিতে টোপ আর মাছ কোনোটাই নেই। এরপর ভাঙা অট্টালিকায় তাদের জন্য নির্দিষ্ট ঘরে ফিরে এসে দেখলেন বন্ধুরা তার মাছ শিকার নিয়ে পরিহাস করছে। তখনই তিনি বন্ধুদের কাছে জানতে পারলেন, পুকুর ঘাটের সেই মেয়েটি এদের এসব বলে গেছে। মেয়েটির নাম যামিনী। এভাবেই তিনি যামিনীর প্রকৃত পরিচয় জানতে পারলেন।

মধ্যাহ্নভোজের অভিজ্ঞতা: যামিনীদের ভাঙা অট্টালিকার কোনো-একটি ঘরে তাদের দ্বিপ্রাহরিক আহারের ব্যবস্থা হয়। আয়োজন সামান্য, যামিনী নিজেই পরিবেশন করে। তার মধ্যে কোনো অযথা আড়ষ্টতা নেই, শুধু মুখের করুণ গাম্ভীর্য আরও বেশি করে চোখে পড়ে। এরপর উপরতলার কোনো-একটা ঘর থেকে আওয়াজ যখনই ভেসে আসে, তখনই যামিনী চঞ্চল হয়ে বাইরে চলে যায়। যখন সে ফিরে আসে তখন তার মুখে বেদনার ছায়া এবং চোখের অস্থিরতা আরও গভীর হয়ে ওঠে।

“একদিন যেন সে এই ধ্বংসস্তূপেই ধীরে ধীরে বিলীন হয়ে যাবে।”-কার সম্পর্কে এই কথা বলা হয়েছে? কেন বলা হয়েছে? কথাটির যৌক্তিকতা বিচার করো। 

উদ্দিষ্ট : বিশিষ্ট কথাসাহিত্যিক প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের অন্যতম প্রাণশক্তি যামিনী সম্পর্কে প্রশ্নোক্ত কথাটি বলা হয়েছে।

এ কথা বলার কারণ: মৎস্য শিকারের উদ্দেশ্যে গল্প নায়ক তার দুই বধুসহ আকস্মিকভাবে তেলেনাপোতা গ্রামে উপস্থিত হন। এখানেই গল্প নায়কের বন্ধু মণির জ্ঞাতিস্থানীয়া যামিনীর সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এক নির্জন ভগ্ন অট্টালিকায় মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধা মাকে নিয়ে একাকী যামিনীর দিনযাপন। তার ক্ষীণ অপুষ্ট শরীর দেখলে বয়স আন্দাজ করা কঠিন। মুখের শান্ত করুণ গাম্ভীর্যে জীবনের নির্মম যুদ্ধের ইঙ্গিত স্পষ্ট। লোকচক্ষুর অন্তরালে এই পরিত্যক্ত জীবনের সমস্ত মৌন বেদনা যামিনীর সমগ্র সত্তাকে ঘিরে রেখেছে। তেলেনাপোতা যেমন নিঃসঙ্গ একাকী দিনযাপনের ক্লান্ত অবসন্ন যামিনীও যেন তার প্রতীকরূপে একইরকমভাবে ক্লান্ত, অবসন্ন, বেদনাচ্ছন্ন, একাকী। এ কারণেই যামিনী সম্পর্কে এরূপ মন্তব্য করা হয়েছে।

কথাটির যৌক্তিকতা: কৈশোর উত্তীর্ণা যামিনী ভাগ্যবিড়ম্বিতা এক নারী। বৃদ্ধা মা ছাড়া তার আপনজন আর কেউ নেই। সেই বৃদ্ধাও মৃত্যুর প্রহর গুনছেন। অরণ্য পরিবেষ্টিত অন্ধকারাচ্ছন্ন এক বিজন গ্রামের একটি ভগ্ন অট্টালিকায় লোকচক্ষুর অন্তরালে নিয়তির হাতে সমস্ত কিছু সঁপে দিয়ে তাদের দিনযাপন। বৃদ্ধার এক জ্ঞাতিস্থানীয় বোনপো নিরঞ্জনের সঙ্গে শৈশবে যামিনীর সম্বন্ধ স্থির করে রাখেন বৃদ্ধা। কিন্তু বয়ঃকালে নিরঞ্জন যামিনীকে বিয়ে করতে রাজি নয়। বৃদ্ধার পীড়াপীড়িতে সে একসময় প্রতিশ্রুতি দেয় বটে, কিন্তু কার্যক্ষেত্রে সে তেলেনাপোতায় আর ফিরে আসেনি। শৈশব থেকেই একাকী শুধু না পাওয়ার সঙ্গে লড়াই যার, তার পক্ষে জীবনে গতিময় স্রোতের আশা দুরূহ কল্পনামাত্র। যামিনী সম্পর্কে তাই উপরোক্ত মন্তব্যটি অত্যন্ত যথার্থ।

“ব্যাপারটা কী এবার আপনারা হয়তো জানতে চাইবেন।”- গল্পের নায়ক কখন ব্যাপারটা জানতে চেয়েছিলেন? অতঃপর তিনি কী জানতে পারলেন?

জানতে চাওয়ার সময়: প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে আগন্তুক অতিথিরা দ্বিপ্রাহরিক আহারের পর যখন বিশ্রাম নিচ্ছেন, তখন উপায়ান্তর না দেখে অত্যন্ত দ্বিধা নিয়ে যামিনী মণিদাকে ডাক দেয়। খুব নীচু স্বরে তাদের কথোপকথন থেকে জানা যায়, আগন্তুকদের উপস্থিতিকে যামিনীর শয্যাশায়ী, অন্ধ বৃদ্ধা মা নিরঞ্জনের উপস্থিতি বলে ভেবেছেন। তাঁর ধারণা নিরঞ্জন লজ্জায় বৃদ্ধার সঙ্গে দেখা করছে না। তাই তিনি নিরঞ্জনকে তাঁর সামনে উপস্থিত করার জন্য যামিনীকে পীড়াপীড়ি করছেন। যামিনী মণিদাকে এই বিপদ থেকে তাকে মুক্ত করতে অনুরোধ করেন। সেসময় মণিদা বৃদ্ধার কাছে যেতে সম্মত হয়ে ঘরে ঢুকলে গল্পের নায়ক ও অপর বন্ধু ব্যাপারটা জানতে চেয়েছিলেন।

যা জানতে পারলেন: বন্ধুদের কৌতূহলের প্রত্যুত্তরে মণি তাদের বলেন, নিরঞ্জন নামে এক দূরসম্পর্কিত বোনপোর সঙ্গে যামিনীর শৈশবে তার মা যামিনীর বিবাহের বন্দোবস্ত করে রাখেন। কিন্তু বয়ঃপ্রাপ্ত নিরঞ্জন এই দুর্দশাগ্রস্ত লাবণ্যহীনা যামিনীকে বিয়ে করতে রাজি হয় না। সে অন্যত্র বিয়ে করে রীতিমতো সংসারধর্ম পালন করছে। যামিনী নিজেও সেটা জানে। বছর চারেক আগে একবার নাছোড়বান্দা বৃদ্ধাকে নিরঞ্জন বিয়ের ব্যাপারে সম্মতি জানাতে বাধ্য হয়ে বলেছিল যে বিদেশে চাকরি থেকে ফিরে এসে সে বৃদ্ধার মেয়েকে বিয়ে করবে।

“হুঁ, এ তো বড়ো মুশকিল দেখছি।”-বক্তা কে? বক্তা কোন্ বিষয়টিকে ‘মুশকিল’ বলেছেন? মুশকিলের কী সমাধান হয়েছিল?

বক্তাঃ প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্প থেকে আহৃত অংশটির বক্তা হলেন গল্পের নায়ক চরিত্রের বন্ধু মণি।

মুশকিলের বিষয় : যামিনীদের ভগ্ন অট্টালিকার কোনো-একটি ঘরে মধ্যাহ্নভোজের পর গল্পের নায়ক ও তার বন্ধুরা বিশ্রাম নেওয়ার সময় যামিনী অত্যন্ত দ্বিধা নিয়ে মণিদাকে ডাক দেয়। নীচু স্বরে বিপন্নভাবে সে জানায় যে, তার শয্যাশায়ী, অন্ধ, অসুস্থ মা মণিদা ও তার বন্ধুদের আসার খবর পাওয়া মাত্র অত্যন্ত অস্থির হয়ে উঠেছেন। তার ধারণা নিশ্চয়ই নিরঞ্জন এসেছে, শুধু লজ্জায় তার সামনে আসছে না। অন্ধ হওয়ার পর থেকে বৃদ্ধার অধৈর্যতা অনেক বেড়ে গেছে। কোনো কথাই তিনি বোঝেন না। কিছু বললে রেগে, মাথা খুঁড়ে এমন কাণ্ড করেন যে তাকে বাঁচানোই কঠিন হয়ে যায়। সম্পূর্ণ ঘটনাটাই নায়কের বন্ধু মণির কাছে মুশকিলের বিষয়।

মুশকিলের সমাধান : যামিনীর মণিদা সেই বৃদ্ধার ঘরে যাওয়ার জন্য সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালে গল্পের নায়ক তার সহগামী হওয়ার ইচ্ছা প্রকাশ করেন। আগন্তুকদের পদধ্বনি শুনেই বৃদ্ধা জানতে চান যে নিরঞ্জন এসেছে কিনা। নিরঞ্জনের উপস্থিতি সম্পর্কে একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই কাতর অনুনয়ের সুরে তিনি বলেন, “এবার তো আর অমন করে পালাবি না?” সে সময় উপস্থিত সকলকে অবাক করে দিয়ে গল্পের নায়ক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তিনি কথা দেন, আর তিনি পালাবেন না, যামিনীকে তিনি গ্রহণ করবেন। বৃদ্ধা আর মণি তো বটেই, যামিনীও গল্প নায়কের এই প্রতিশ্রুতিতে হতবাক। অবশ্য কলকাতায় ফিরে ম্যালেরিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার পর গল্প নায়কের স্মৃতিতে তেলেনাপোতা আবছা হয়ে যায়। তাই মুশকিলের সমাধান হয়নি বলেই আমরা সিদ্ধান্তে আসতে পারি।

“চলো আমিও যাব।”-কে, কোথায় যেতে চেয়েছিল? সেখানে তার ভূমিকা কী ছিল আলোচনা করো।

বক্তা ও তার যাওয়ার স্থান : প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের প্রাণশক্তি যামিনীর সঙ্গে গল্পের অপর চরিত্র গল্প নায়কের বন্ধু, যামিনীর জ্ঞাতিস্থানীয় দাদা মণির কিছুক্ষণ কথোপকথন চলে। অতঃপর মণি যামিনীর শয্যাশায়ী অন্ধ বৃদ্ধা মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালে গল্প নায়ক তার সঙ্গে সেখানে যেতে চেয়েছিলেন।

গল্প নায়কের ভূমিকা : যামিনীর মণিদা বৃদ্ধার ঘরে যাওয়ার জন্য সিঁড়ির দিকে পা বাড়ালে গল্পের নায়ক তার সহগামী হন। আগন্তুকদের পদধ্বনি শুনেই বৃদ্ধা জানতে চান যে নিরঞ্জন এসেছে কিনা। নিরঞ্জনের উপস্থিতি সম্পর্কে একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই কাতর অনুনয়ের সুরে তিনি বলেন, “এবার তো আর অমন করে পালাবি না?” উপস্থিত সকলকে অবাক করে দিয়ে গল্পের নায়ক সেই মুহূর্তে নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হন। তিনি কথা দেন, আর তিনি পালাবেন না। তার এই কথায় মণি এবং যামিনী দুজনেই বিস্মিত, স্তম্ভিত হয়ে যান। গল্পের নায়ক সেদিকে না তাকিয়ে শুধুমাত্র বৃদ্ধার দৃষ্টিহীন দুই চোখের কোটরের দিকে রুদ্ধ নিশ্বাসে চেয়ে থাকেন। বৃদ্ধা নিরঞ্জনরূপী গল্প নায়ককে আরও নানা কথা বলে যান। যামিনীর প্রশংসা করে বলেন যে, যামিনীকে নিজের স্ত্রী হিসেবে পেলে তিনি সুখী হবেন। শেষ আবার বৃদ্ধা জিজ্ঞাসা করেন, “যামিনীকে তুই নিবি তো বাবা? তোর শেষ কথা না পেলে আমি মরেও শান্তি পাব না।” এবারেও নিরঞ্জনরূপী গল্প নায়ক বৃদ্ধাকে সুদৃঢ় প্রতিশ্রুতি দেন।

‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে বৃদ্ধার সঙ্গে গল্প নায়কের পরিচয় হয় কীভাবে? বৃদ্ধার সঙ্গে তার যে কথোপকথন হয়, তা নিজের ভাষায় লেখো।

বৃদ্ধার সঙ্গে নায়কের পরিচয় : প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পে তেলেনাপোতা গ্রামে দুই বন্ধুসহ গল্প নায়ক আকস্মিকভাবে উপস্থিত হন। নায়কেরই মণি নামক বন্ধুর জ্ঞাতিস্থানীয়া যামিনীদের ভগ্ন অট্টালিকায় দ্বিপ্রাহরিক আহারের পর ঘটনাচক্রে যামিনীর অসুস্থ বৃদ্ধা কঙ্কালসার মৃত্যুপথযাত্রী মায়ের ঘরে গল্প নায়ককে নিয়ে উপস্থিত হন মণিদা। অন্ধকার ঘরে একটা ভাঙা চৌকির উপর ছেঁড়া কাঁথায় আপাদমস্তক জড়িয়ে শুয়ে ছিলেন সেই বৃদ্ধা। এভাবেই বৃদ্ধার সঙ্গে তার পরিচয় হয়।

বৃদ্ধার সঙ্গে কথোপকথন: আগন্তুকদের পদধ্বনি শুনেই বৃদ্ধা জানতে চান যে নিরঞ্জন এসেছে কিনা। নিরঞ্জনের উপস্থিতি সম্পর্কে একপ্রকার নিশ্চিত হয়েই কাতর অনুনয়ের সুরে তিনি বলেন, “এবার তো আর অমন করে পালাবি না?” ইতোপূর্বে গল্প নায়ক মণির কাছে এই বৃদ্ধা ও তাঁর কন্যা যামিনীর দুর্ভাগ্য ও জীবনযুদ্ধের পরিচয় পেয়েছেন। বৃদ্ধার জ্ঞাতিস্থানীয়া বোনপো নিরঞ্জন যামিনীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও আর তেলেনাপোতায় আসেনি। তাই বৃদ্ধার প্রশ্নের উত্তরে মণি কিছু বলার আগেই আবেগপ্রবণ গল্প নায়ক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বলে ওঠেন, “না মাসিমা, আর পালাব না।” এই প্রতিশ্রুতি বৃদ্ধাকে চঞ্চল করে তোলে। তিনি কৃতজ্ঞতায় ভরিয়ে দেন নিরঞ্জনরূপী গল্প নায়ককে। যামিনীকে বিয়ে করে যে নিরঞ্জনরূপী গল্প নায়ক সুখী হবেন তিনি তাও জানান। অতঃপর আবার যখন বৃদ্ধা জানতে চান যে উপস্থিত নিরঞ্জন যামিনীকে গ্রহণ করবে কিনা, তখন আবেগজড়িত কণ্ঠে নায়ক বলে ওঠেন, “আমি তোমায় কথা দিচ্ছি মাসিমা। আমার কথার নড়চড় হবে না।”

“একবার ক্ষণিকের জন্য আবিষ্কৃত হয়ে তেলেনাপোতা আবার চিরন্তন রাত্রির অতলতায় নিমগ্ন হয়ে যাবে।”- তেলেনাপোতা কীভাবে আবিষ্কৃত হল আর কীভাবে রাত্রির অতলতায় নিমগ্ন হল?

তেলেনাপোতা আবিষ্কারের কাহিনি: মহানগরী কলকাতা থেকে ত্রিশ মাইল দূরে অখ্যাত জনমানবহীন তেলেনাপোতায় যাওয়ার উদ্দেশ্যে কোনো-এক পড়ন্ত বিকেলে ভিড় বাসে ওঠেন গল্পের নায়ক ও তার দুই সঙ্গী। বাসযাত্রা শেষে কিছুক্ষণ প্রতীক্ষার পর বামনাকৃতির একটি গোরুর গাড়ির ছইয়ের ভিতর তিন সঙ্গী কোনোক্রমে জায়গা করে নেন। ঘনান্ধকার জঙ্গল ভেদ করে সুড়ঙ্গের মতো পথ ধরে একটু একটু করে এগোতে থাকে এই অতি ক্ষুদ্র গো-শকট। হঠাৎ জঙ্গলে চিতা বাঘের হাত থেকে রক্ষা পেতে গাড়োয়ানের ক্যানেস্তারা বাজানোর উৎকট আওয়াজে হুঁশ ফেরে তাদের। কৃষ্ণপক্ষের চাঁদের আলোয় তারা দেখতে পান দু-পাশে আবছা প্রাচীন অট্টালিকা, ভগ্ন মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ মহাকালের ক্ষতচিহ্ন নিয়ে দাঁড়িয়ে। দুই-তিনবার বাঁক ঘুরে গোরুর গাড়িটি শেষ পর্যন্ত একটি ভগ্ন অট্টালিকার সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। সেখানেই যামিনী ও তার মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধা মায়ের পরিচয় পান গল্প নায়ক। এভাবেই তেলেনাপোতা আবিষ্কৃত হয়।

রাত্রির অতলতায় নিমগ্ন হওয়ার ঘটনা: ঘটনাচক্রে গল্প নায়ক জানতে পারেন, যামিনীর মায়ের দূর সম্পর্কের বোনপো নিরঞ্জন যামিনীকে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়েও তেলেনাপোতায় কোনোদিন ফেরেনি। যা যামিনীর মাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে তোলে। এ সব শুনে গল্পের নায়ক নিরঞ্জনের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়ে বৃদ্ধার কাছে যামিনীকে বিয়ে করার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে ফিরে এলেন কলকাতায়। তবে ফিরে আসার কয়েকদিনের মধ্যেই তিনি ম্যালেরিয়া জ্বরে আক্রান্ত হন। দীর্ঘ রোগভোগের পর যখন সুস্থ হন, তখন উপলব্ধি করেন, তেলেনাপোতার স্মৃতি কেমন যেন ঝাপসা হয়ে গেছে। তার মনে হয়, তেলেনাপোতা বলে সত্যি কিছু নেই। এভাবেই তেলেনাপোতা ও সেখানে বসবাসকারী যামিনীদের জীবন আবার চিরন্তন রাত্রির অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়ে যায়।

আরও পড়ুন – ছাত্রজীবন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top