আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে সহায়ক উপাদান কী ছিল

আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে সহায়ক উপাদানসমূহ
ইউরোপে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের জ্ঞানভাণ্ডারের সমাবেশ ও সমন্বয়ের ফলে নতুন চিন্তাচেতনার উদ্ভব হয় এবং নতুন নতুন আবিষ্কার ঘটে। জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রেও তার প্রভাব লক্ষণীয়। এ প্রসঙ্গে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে বেশকিছু সহায়ক উপাদান দেখা যায়। যথা-
(1) কম্পাস: চতুর্দশ শতাব্দীতে ওয়ালিংফোর্ড-এর এক ব্যক্তি রিচার্ড (Richard of Wallingford), এক ধরনের কম্পাস ব্যবহার করেন। দিকনির্ণয় ছাড়াও এই কম্পাস দিয়ে গাণিতিক কাজ করা যেত। রিচার্ড এই কম্পাসের সাহায্যে পৃথিবীর পরিধি পরিমাপের চেষ্টা করেন।
(2) দূরবীক্ষণ যন্ত্র: প্রথমে একজন ওলন্দাজ নাবিক ও পরবর্তীকালে গ্যালিলিও টেলিস্কোপ বা দূরবীক্ষণ যন্ত্র আবিষ্কার করেন। এর দ্বারা আবিষ্কৃত হয় অনেককিছু, যেমন-চাঁদের জমি অসমান, সেখানে আগ্নেয়গিরির জ্বালামুখ আছে, শুক্র গ্রহের নিজস্ব আলো নেই-সূর্যের আলোয় আলোকিত প্রভৃতি। এ ছাড়া বহু ছায়াপথ, গ্রহ-উপগ্রহ সম্বন্ধেও জানা যায়।
(3) পোপের ঘোষণা: জানা যায়, পোপ পঞ্চম সিক্সটাস (Pope Sixtus V) নির্দেশ দেন (১৫৮৫ খ্রিস্টাব্দ) যেসব জ্যোতিষী ঠিকুজি বা কুষ্ঠি বিচার করবেন, তাদের ধর্মীয় আদালতে বিচার করা হবে।
(4) সৌরকেন্দ্রিক বিশ্বের ধারণা: পোল্যান্ডের বিজ্ঞানী কোপারনিকাস সৌরকেন্দ্রিক বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের কথা লেখেন। তাঁর ছাত্র জোয়াকিম রেটিকাস এই ধারণাকে প্রচার করেন। পরবর্তীকালে জার্মান বিজ্ঞানী কেপলার এবং ইতালীয় বিজ্ঞানী গ্যালিলিও এই ধারণাকে সঠিক বলে প্রমাণ করেন। অবশ্য তৎকালীন ধর্মাশ্রয়ী সমাজের প্রবল বাধার সামনে সীমিত এই উদ্যোগ তাৎক্ষণিক ফল দেয়নি। পরে শিক্ষার প্রসার ও নতুন চিন্তাধারা গড়ে উঠলে নতুন ধারণার প্রসার ঘটে।