আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ফলাফলগুলি লেখো

আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ফলাফল
জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় গ্রহনক্ষত্র পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে নতুন তথ্য আবিষ্কৃত হয়েছিল। খুলে গিয়েছিল আধুনিক বিজ্ঞানের দুয়ার। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার দরুণ বহুমুখী ফলাফল লক্ষ করা যায়, সেগুলি হল-
(1) ভ্রান্ত ধারণার বিলোপ: ষোড়শ-সপ্তদশ শতকে জ্যোতির্বিজ্ঞানে যেসকল আধুনিক ধারণার জন্ম হয়, তা পুরোনো টলেমি, অ্যারিস্টটল ও খ্রিস্টান চার্চ প্রদত্ত ভূকেন্দ্রিক বিশ্বব্র্যান্ডের ধারণার বিলুপ্তি ঘটায়।
(2) চার্চের আক্রমণ: বিজ্ঞানের নিত্যনতুন তত্ত্বগুলি চার্চ ও পোপতন্ত্রের বিরোধী ছিল। এই সকল আধুনিক ধারণা যাজকদের অত্যন্ত ক্ষুব্ধ করে তোলে। ফলে বিজ্ঞানীদের উপর চার্চের আক্রমণ বৃদ্ধি পায়। বুনো, গ্যালিলিও বা কেপলারের মতো বিজ্ঞানীরা অনেকেই চার্চের ক্ষোভের মুখে পড়ে সীমাহীন দুর্দশার শিকার হয়েছিলেন।
(3) খ্রিস্টান চার্চের ব্যর্থতা: খ্রিস্টান চার্চ নতুন ধারণাকে নানাভাবে রুদ্ধ করতে সচেষ্ট হয়। এজন্য কখনও ব্রুনোকে পুড়িয়ে হত্যা বা কখনও গ্যালিলিও-কে গৃহবন্দির শাস্তিও দেওয়া হয়। কিন্তু ব্যক্তিকে আটকালেও তাঁর তত্ত্বের বিস্তৃতির পথকে স্তব্ধ করতে পারেনি খ্রিস্টান চার্চ। তাদের প্রয়াস শেষপর্যন্ত ব্যর্থ হয়।
(4) ধর্মসংস্কারের প্রেক্ষাপট: বৈজ্ঞানিক ধ্যানধারণার অগ্রগতি মানুষকে বিভিন্ন কুসংস্কারের বিরুদ্ধে সচেতন করে তোলে। এই সচেতনতা ইউরোপে ধর্মসংস্কার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট প্রস্তুত করতে যথেষ্ট সহায়তা করেছিল। খ্রিস্টান চার্চের কুসংস্কারের বিরুদ্ধে মার্টিন লুথারের ধর্মসংস্কার আন্দোলন মানুষের চিন্তাভাবনায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসে।
(5) বিজ্ঞানের অগ্রগতি: আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চা মানুষের মনে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে প্রসারিত করে। ছাত্রছাত্রী ও সাধারণ মানুষের কাছে বৈজ্ঞানিক প্রযুক্তি ও চিন্তার সাহায্যে জ্ঞানের নানান শাখার মতামতসমূহ পৌঁছে যায়।