আধুনিক বিজ্ঞানের জনক কাকে বলা হয় ও কেন

ইতালীয় বিজ্ঞানী গ্যালিলিও গ্যালিলি-কে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক হিসেবে অভিহিত করা হয়। বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন (Albert Einstein) গ্যালিলিও-কে Father of Modern Science আখ্যা দেন।
গ্যালিলিও-কে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলার কারণ
গ্যালিলিওকে আধুনিক বিজ্ঞানের জনক বলার কারণগুলি হল-
(1) বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ: বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির প্রয়োগ এবং পরীক্ষামূলক পদ্ধতির প্রচলন ছিল গ্যালিলিও-র উল্লেখযোগ্য অবদান। তিনি সমসাময়িক প্রচলিত বিশ্বাসকে অন্ধভাবে মেনে নেননি। বরং পরীক্ষানির্ভর পদ্ধতির সাহায্যে প্রচলিত ধারণার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তোলেন ও তাকে বৈজ্ঞানিক ভিত্তির উপর প্রতিষ্ঠা করতে উদ্যত হন।
(2) সৌরকেন্দ্রিক মহাবিশ্বের ধারণা প্রতিষ্ঠা: প্রাচীন কালের পৃথিবীকেন্দ্রিক ব্রহ্মান্ডের ধারণাকে ভ্রান্ত প্রমাণ করতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেন গ্যালিলিও। এই ধারণার বিপরীতে গিয়ে প্রথম সূর্যকেন্দ্রিক ব্রহ্মান্ডের কথা বলেন কোপারনিকাস। কিন্তু গ্যালিলিও নিজ আবিষ্কৃত দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে এই ধারণাকে বিজ্ঞানসম্মত ভিত্তি প্রদান করতে সক্ষম হন।
(3) মহাকাশ সম্পর্কিত নতুন তথ্য উন্মোচন: দূরবীক্ষণ যন্ত্রকে কাজে লাগিয়ে গ্যালিলিও মহাকাশ সম্পর্কিত বিভিন্ন নতুন তথ্য উন্মোচন করেন। যেমন- বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ ও তাদের পরিক্রমণ তত্ত্ব, চন্দ্রকলঙ্ক ও সৌরকলঙ্কের রহস্য উন্মোচন, শনির বলয়ের অস্তিত্ব প্রভৃতি।
(4) আধুনিক পদার্থবিদ্যার ভিত্তি গঠন: গতিবিদ্যা ও বলবিদ্যায় গালিলিও গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বাক্ষর রাখেন। তিনি বস্তুর গতিসংক্রান্ত অ্যারিস্টটলীয় সিদ্ধান্তকে ভ্রান্ত প্রমাণ করে পতনশীল বস্তুর সূত্র গড়ে তোলেন। এতে বলা হয় কোনও পদার্থ যে মাধ্যমের ভিতর দিয়ে এগিয়ে চলে, সেই মাধ্যমের ঘনত্বের উপর বস্তুর গতি নির্ভরশীল। এ ছাড়াও গতিবিদ্যায় ত্বরণের গুরুত্ব, দোলকের ধর্ম-সহ একাধিক বিষয় আবিষ্কার করেন, যা আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি গড়ে তুলেছিল। বস্তুতপক্ষে গ্যালিলিও-র আবিষ্কারসমূহ পরবর্তীকালে বিজ্ঞানের নানা ক্ষেত্রে গবেষণাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে প্রভূত সহায়তা করেছিল। তাই সবমিলিয়ে গ্যালিলিও আধুনিক বিজ্ঞানের জনক হিসেবে অভিহিত হন।