প্রাচীন মিশরে জ্যোতিষচর্চার বিবরণ দাও

প্রাচীন মিশরে জ্যোতিষচর্চার বিবরণ দাও

প্রাচীন মিশরে জ্যোতিষচর্চার বিবরণ দাও
প্রাচীন মিশরে জ্যোতিষচর্চার বিবরণ দাও

প্রাচীন মিশরে জ্যোতিষচর্চা

আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ থেকে ৩০০ অব্দের মধ্যে মিশরীয় জ্যোতিষশাস্ত্র বিকশিত হয়। এখানে ধর্ম এবং জ্যোতিষশাস্ত্র ছিল পরস্পরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত।

(1) মহাজাগতিক তথ্য: মিশরের পুরোহিত শ্রেণি সমাজে বিশেষ মর্যাদা ও সুবিধাভোগী ছিলেন। তারা জ্যোতিষচর্চা করতেন, আকাশে গ্রহনক্ষত্রের অবস্থান ও গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করতেন। সম্ভবত তারা নীলনদের বন্যার সঠিক সময় সম্বন্ধে পূর্বাভাসও দিতেন।

(2) বছর গণনা: প্রথমদিকে মিশরীয় জ্যোতির্বিদরা চান্দ্রবৎসর গণনা করতেন। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ অব্দ থেকে সৌরবৎসর গণনা শুরু হয়। যেসময় নীলনদে প্রথম বন্যার আগমন অর্থাৎ জুনমাসে তারা সকটিস (Soktis) নক্ষত্রের (ভারতে ‘লুব্ধক নক্ষত্র’) আবির্ভাব লক্ষ করে বছর গণনা শুরু করেন। এতে ৩৬৫ দিনে এক বছর ধার্য করা হলে, ৩০ দিনে একমাস এবং ১২ মাসে এক বছর এই গণনা চালু হয়। এর ফলে অবশিষ্ট পাঁচ দিন (এপাগোমেনা) মিশরীয় দেবদেবীর পূজাপাঠ ও উৎসবের জন্য নির্দিষ্ট করা হয়।

(3) কুষ্ঠি বিচার: মানুষের উপর গ্রহনক্ষত্রের প্রভাব সম্বন্ধে ধারণা পূর্ব প্রচলিত ছিল। মিশরীয় পুরোহিত সেই ধারণায় কুষ্ঠি (Horoscope) বিচার প্রথা যোগ করে নতুন মাত্রা দেন। বলা হয়, শিশুর জন্মের সময় মহাকাশে জ্যোতিষ্কদের অবস্থান অনুযায়ী শিশুর ভাগ্য নির্ধারিত হবে।

(4) ব্রক্ষ্মান্ড পরিকল্পনা: মিশরীয়দের ব্র্যান্ড পরিকল্পনার সঙ্গে ব্যাবিলনীয় ব্রহ্মাণ্ডের সাদৃশ্য পাওয়া যায়। মিশরীয়দের মতে, পৃথিবী একটি লম্বা বাক্সের মতো এবং ভূপৃষ্ঠ সমতল না হওয়ায় অনেকটা বাটি আকৃতির মতো। এই পৃথিবীর মধ্যস্থলে মিশর অবস্থিত।

(5) অন্যান্য: মিশরীয়রা আকাশের বিভিন্ন তারা, তারামণ্ডল ও রাশিচক্র সম্পর্কে পরিচিত ছিলেন। তারা ধ্রুবনক্ষত্রের চারিদিকে অবস্থিত নক্ষত্রদের পর্যবেক্ষণ করতেন। এমনকি ধ্রুবনক্ষত্র থেকে উত্তরদিক নির্ণয় করে মিশরীয়রা মন্দির বা পিরামিড নির্মাণের কাজে অগ্রসর হতেন।

আরও পড়ুন – ছাত্রজীবন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top