‘ভুডু’ ও ‘শামান’ বলতে কী বোঝো 

‘ভুডু’ ও ‘শামান’ বলতে কী বোঝো 

'ভুডু' ও 'শামান' বলতে কী বোঝো 
‘ভুডু’ ও ‘শামান’ বলতে কী বোঝো

ভুডু

ভুডু (Voodoo) হল এক ধরনের ব্ল্যাক ম্যাজিক বা ডাইনিবিদ্যা। হাইতিতে (Haiti) উৎপত্তি লাভ করলেও সমগ্র আফ্রিকা, ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জ, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের লুইসিয়ানা অঞ্চলে এর ব্যাপক প্রভাব লক্ষ করা যায়। ভুডু শব্দের অর্থ আত্মা। এই শব্দটির উৎপত্তি ফন জাতির কাছ থেকে। ভুডু বিদ্যায় সিদ্ধ ব্যক্তিরা নাকি মৃত ব্যক্তির আত্মাকে গোলামের মতো খাটাতে পারে। অনেক মানুষের বিশ্বাস, যারা ভুডু বিদ্যা জানে তারা ইচ্ছা করলে যে-কোনো মানুষের ক্ষতি করতে পারে। এটি আফ্রিকান ধর্মবিশ্বাস, ক্যাথলিক খ্রিস্ট ধর্ম এবং আদিবাসী চর্চার সমন্বয়ে গঠিত একটি বিশ্বাস।

(1) বৈশিষ্ট্যসমূহ: ভুডু-র মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল- ভুডু বিদ্যা অনুসারে বিশ্বে বিভিন্ন আত্মা বা লোয়া আছে। ভুডু বিদ্যায় সিদ্ধ ব্যক্তিরা এদের পূজা করে এবং আহ্বান জানায়। তারা সংগীত, নৃত্য, প্রার্থনা ও বলিদানের মাধ্যমে বিভিন্ন আচার-অনুষ্ঠান পালন করে। ভুডু-তে এক ধরনের পুতুলের ব্যবহার দেখা যায়, যা ভুডু পুতুল (Voodoo Doll) নামে পরিচিত। সাধারণত কোনও ব্যক্তির ক্ষতির উদ্দেশ্যে এগুলি ব্যবহৃত হয়। ভুডু বিদ্যা নির্দিষ্ট কোনও উদ্দেশ্য  যেমন- সুরক্ষা, নিরাময় বা শত্রুপক্ষকে পরাজিত করার জন্য ব্যবহার করা হয়। তারা বানর, কুমির, সাপ, কুকুর প্রভৃতি প্রাণীর মূর্তিও পূজা করে।

শামান

অপার্থিব ও অলৌকিক শক্তির উপর নির্ভরশীল একটি আদিম ধর্ম হল শামানতন্ত্র (Shamanism)। এই শামানতন্ত্রে বিশ্বাসী ব্যক্তিরাই শামান (Shaman) নামে পরিচিত। শামানদের অনেকে জাদুকর আবার অনেকে কবিরাজ বলে মনে করেন। শামান শব্দটি সাইবেরিয়ার (Siberia) তুঙ্গুসভাষী মেষপালকদের কাছ থেকে এসেছে। পৃথিবীর প্রায় ১০টি দেশে শামানরা ছড়িয়ে রয়েছে, যেমন-গ্রিনল্যান্ড, রাশিয়া, কোরিয়া, মেক্সিকো, ভারতের আন্দামান দ্বীপপুঞ্জ, আফ্রিকার বিভিন্ন দেশ প্রভৃতি।

(1) বৈশিষ্ট্যসমূহ : শামানতন্ত্রের মূল বৈশিষ্ট্যগুলি হল-

শামানরা অলৌকিক ক্ষমতার অধিকারী। তারা মৃত ব্যক্তির আত্মার কাছ থেকে জ্ঞান সংগ্রহ করতে পারে। নিজ ইচ্ছানুযায়ী তারা স্বর্গ ও নরকে স্বচ্ছন্দ বিচরণের ক্ষমতাসম্পন্ন। শামানরা প্রায়শই রোগনিরাময়ের কাজে নিয়োজিত থাকে। তারা জড়িবুটি, গাছগাছড়ার ব্যবহার করে চিকিৎসার কাজ করে। দেশভেদে শামানরা অন্যান্য অলৌকিক কাজের সঙ্গেও যুক্ত। যেমন- মধ্য অস্ট্রেলিয়ার খরাপ্রবণ অঞ্চলে শামানরা বৃষ্টিকে আহ্বান করার কাজ করে। আবার বিভিন্ন আফ্রিকান গোষ্ঠীর মধ্যে শামানদের কাজ শিকারকে সফল করা। এমনকি কখনও তারা সমাজের আধ্যাত্মিক পথপ্রদর্শকের ভূমিকাও পালন করে। মানুষের সামাজিক ও ধর্মীয় সমস্যার সমাধান করে শামানরা।

আরও পড়ুন – ছাত্রজীবন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top