টাকা লেখো: জাপানের শিন্টো ধর্ম
অথবা, শিন্টো ধর্ম সম্পর্কে কী জান

ভূমিকা
এশিয়া মহাদেশের একেবারে পূর্ব-প্রান্তের একটি দ্বীপ রাষ্ট্র হল জাপান। জাপানের একটি আদি বা প্রাচীন ধর্ম হল শিন্টো ধর্ম। এটি একটি প্রতিবাদী ধর্ম। শিন্টো ধর্ম কোনো মহাপুরুষ বা ধর্মপ্রচারকের দ্বারা প্রবর্তিত হয়নি। এই ধর্মের রীতিনীতি ও বিশ্বাস প্রজন্মের পর প্রজন্ম মৌখিকভাবেই অনুসরণ করা হয়।
(1) অর্থ: চিনা শব্দ শেন্ডো থেকে জাপানি শিন্টো শব্দের উৎপত্তি। শিন-এর অর্থ আধ্যাত্মিক শক্তি এবং টো-এর অর্থ হল পথ। এই অর্থে শিন্টো কথার অর্থ হল দেবতা বা ঈশ্বরের পথ।
(2) শিন্টো ধর্মের বৈশিষ্ট্য: শিন্টো ধর্মমতের কতকগুলি বৈশিষ্ট্যের কথা উল্লেখ করা যায়। যথা-
- কামির প্রতি বিশ্বাস : শিন্টো ধর্মের মূলকথা বল কামি অর্থাৎ ঐশ্বরিক শক্তির প্রতি গভীর বিশ্বাস। এই জীবজগতে সকল প্রাণী ও বস্তুর মধ্যে কামি অর্থাৎ ঐশ্বরিক শক্তি বিদ্যমান। কামিরা বসবাস করে বিভিন্ন প্রাকৃতিক উপাদানে। তাই শিন্টো ধর্ম কামি ধর্ম বা কামির পথ নামেও পরিচিত।
- আচারনির্ভরতা : জাপানের শিল্টো ধর্ম মূলত আচারনির্ভর একটি ধর্ম। প্রথাগত বিশ্বাসের ওপর ভিত্তি করে এই ধর্মমত গড়ে উঠেছে। বিভিন্ন ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে এই ধর্ম পালিত হত।
- বহু দেবদেবীর অস্তিত্ব: শিন্টো ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হল বহু দেবদেবীর অস্তিত্বে বিশ্বাস। সূর্য, অগ্নি, বৃষ্টি প্রভৃতি প্রাকৃতিক শক্তিকে এই ধর্মে বিশ্বাসীরা দেবতারূপে কল্পনা করে আরাধনা করতেন।
- কামির উপাসনা: জাপানে অলৌকিক শক্তি ও দেবদেবীর উপাসনা হত, যা কামি-র উপাসনা নামে পরিচিত। অধ্যাপক জোশেফ ক্যালি সহ অনেকেই বলেছেন, শিন্টো হল কামি বা ঐশ্বরিক শক্তির প্রতি বিশ্বাস। শিন্টো ধর্মে কামির পূজার জন্য মানসিক ও শারীরিক শুদ্ধতার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে।
মূল্যায়ন
সবশেষে বলা যায় যে, শিল্টো ধর্ম হল একটি আচার-অনুষ্ঠান ও প্রাচীন ঐতিহ্যনির্ভর ধর্ম। এই ধর্ম সর্বপ্রাণবাদে বিশ্বাসী। এই ধর্মের না-ছিল কোনো প্রাতিষ্ঠানিক ভিত্তি, না-ছিল কোনো পবিত্র ধর্মগ্রন্থ। তবুও জাপানের ধর্ম ও সংস্কৃতিতে শিন্টো ধর্মের প্রভাব ছিল গভীর।