তেলেনাপোতা যাওয়ার কারণ কী? একে লেখক আবিষ্কার বলেছেন কেন

তেলেনাপোতা যাওয়ার কারণ : মহানগরীর কর্মব্যস্ততায় আর মানুষের ভিড়ে হাঁপিয়ে ওঠার পর যদি দু-দিনের ছুটি মেলে, আর সেই মুহূর্তে বন্ধু স্থানীয় কেউ যদি কোনো-এক অচিন জগতের আশ্চর্য এক সরোবরের হদিস এনে দেয়, যে সরোবরের মাছেরা আজ পর্যন্ত বড়শি বিদ্ধ হয়নি, তাহলে মৎস্য শিকারে আনকোরা যে কেউ সেখানে যেতে প্রলুব্ধ হবে। এ গল্পের নায়কও তেমনই জনৈক বন্ধুর ফুসলানিতে প্ররোচিত হয়ে সবান্ধব তেলেনাপোতায় উপস্থিত হন।
আবিষ্কার বলার কারণ: লেখক মানসপথে গল্পের চরিত্রদের সঙ্গে নিয়ে পাঠকদের ঘুরিয়ে এনেছেন ঘনান্ধকার, অরণ্যবেষ্টিত, বিস্মৃতপ্রায় জনমানবহীন তেলেনাপোতা গ্রামে। ‘তেলেনাপোতা’-এই নামের কোনো গ্রাম বাস্তবে হয়তো নেই, কিন্তু এই ধরনের অতীত-বিজন জনপদ ইতিহাসের অন্দরে উঁকি দিলেই খুঁজে পাওয়া যায়। মশা ও জলবাহিত বিভিন্ন রোগের কারণে আর মানুষের অসচেতনতার ফলে ঘটা মহামারিতে এই বাংলার বহু ‘তেলেনাপোতা’ অতীতে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে। যেখানে আগে জীবনের স্রোত ছিল, অট্টালিকাগুলিতে মানুষের কালোরোল ছিল, পুকুর ঘাটে নরনারীর যাতায়াত ছিল, প্রেম ছিল, বিরহ ছিল-বিস্মৃতির অন্তরালে সেসব জনপদ হয়তো আজ নিস্পন্দ, নিশ্চল। তেমনি কোনো অন্তরালবর্তীর বিজনে উপস্থিত হওয়া, সেখানকার কোনো-একটি ভগ্ন প্রকোষ্ঠে মৃত্যুপথযাত্রী বৃদ্ধা মাকে নিয়ে কোনো যুবতীর বেঁচে থাকার সংগ্রামের সাক্ষী হওয়া, হঠাৎ কোনো রোমান্টিক আবেশে জড়িয়ে পড়ার অভিজ্ঞতা আবিষ্কারের চেয়ে কিছু কম নয়। তাই লেখক এটিকে আবিষ্কার বলেছেন।