“একটু এখানে শুনে যাও মণিদা।”-মণিদা কে? মণিদাকে কে ডেকেছিল? উভয়ের মধ্যে যে কথোপকথন হয়েছিল তা বর্ণনা করো

মণিদার পরিচয় : প্রেমেন্দ্র মিত্র রচিত ‘তেলেনাপোতা আবিষ্কার’ গল্পের নায়ক চরিত্রের পানরসিক বন্ধুটি হলেন আলোচ্য অংশে উল্লিখিত মণিদা।
মণিদাকে যে ডেকেছিল: মণিদাকে ডেকেছিল তারই জ্ঞাতিস্থানীয়া, এই গল্পের প্রাণশক্তি যামিনী।
উভয়ের কথোপকথন : দ্বিপ্রাহরিক আহারের পর আগন্তুক অতিথিরা যখন বিশ্রাম নিচ্ছেন, তখন উপায়ান্তর না দেখে অত্যন্ত দ্বিধা নিয়ে যামিনী মণিদাকে ডাক দেয়। নীচু স্বরে বিপন্নভাবে যামিনী মণিদাকে জানায় যে, তার শয্যাশায়ী, অন্ধ, অসুস্থ মা মণিদা ও তার বন্ধুদের আসার খবর পাওয়া মাত্র অত্যন্ত অস্থির হয়ে উঠেছেন। বৃদ্ধার এই অস্থিরতার কারণ মণিদার বুঝতে অসুবিধা হয় না। বৃদ্ধা ভেবেছেন, নিরঞ্জন নামক তার যে দূরসম্পর্কিত বোনপোর সঙ্গে কোনো-এক সময় যামিনীর বিয়ের সম্বন্ধ স্থির হয়েছিল, সে-ই বুঝি এসেছে।
মণিদার অনুমান সঠিক। যামিনী তাকে বলে, বৃদ্ধার ধারণা নিরঞ্জন নিশ্চয়ই এসেছে, কিন্তু লজ্জায় তার সঙ্গে দেখা করছে না। নিরঞ্জনকে তার কাছে নিয়ে আসার জন্য বৃদ্ধা যামিনীকে পীড়াপীড়ি করছেন। অন্ধ হওয়ার পর থেকে বৃদ্ধার অধৈর্যতা অনেক বেড়ে গেছে। কোনো কথাই তিনি বোঝেন না, রেগে মাথা খুঁড়ে এমন কাণ্ড করেন যে তাকে বাঁচানোই কঠিন হয়ে যায়। যামিনীর কথা শুনে নায়কের বন্ধু মণিদাও তার অসহায়তার কথা প্রকাশ করেন। এরই মধ্যে উপর থেকে যামিনীর মায়ের তীক্ষ্ণ কণ্ঠস্বর শোনা যায়, যা শুনে যামিনী মণিদাকে তার মায়ের কাছে একবার যাওয়ার জন্য কাতর অনুনয় করে। অতঃপর মণিদা বৃদ্ধার কাছে যেতে সম্মতি জানান।