শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা - মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা
শিক্ষাবিস্তারে গণমাধ্যমের ভূমিকা – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা
  • গণমাধ্যমের নব সংযোজন কম্পিউটার
  • শিক্ষা ও শিক্ষাবিস্তারের ধারণা
  • দূরদর্শন
  • লোকশিক্ষার মাধ্যম গণমাধ্যম
  • চলচ্চিত্র ও সংবাদপত্র
  • গণমাধ্যম হিসেবে বেতার

ভূমিকা: জীবনে শৃঙ্খলাবোধ ও নিয়মানুবর্তিতার অসীম প্রয়োজন। প্রকৃত শিক্ষা না-হলে জীবনের মূল্য বোঝা যায় না। লোকশিক্ষার ব্যাপক আয়োজন ছাড়া গণতন্ত্রের সবুজ সতেজ বৃক্ষ দেশের সর্বব্যাপী শিক্ষাহীনতা ও জ্ঞানহীনতার তপ্ত মরু-নিশ্বাসে শুকিয়ে যায় এবং তার বিকাশের সব সম্ভাবনা অবলুপ্ত হয়ে যায়। ইংরেজদের আগমনের পূর্বে এদেশে সনাতন শিক্ষার ধারা ছিল বহুস্রোতা। ছায়াঘেরা গ্রাম ভারতে সেদিন সর্বজনীন শিক্ষার ছিল অবারিত দ্বার, সেই শিক্ষা আত্মিক শিক্ষা ছিল।

ভারতে লোকশিক্ষার ধারা বিপর্যয়: আবহমান কাল থেকে বাংলার শিক্ষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য যাত্রা, কথকতা, ব্রতকথা, ছড়া ও সংকীর্তনের মাধ্যমে বাঙালির হৃদয়ে ছড়িয়ে পড়ে। অভিনয়, গান ও আবৃত্তির আঙ্গিকে হিন্দুধর্মের সারমর্ম জটাবন্ধন থেকে বহুস্রোতা হয়ে প্রবাহিত হয়ে যেত। পাশ্চাত্য সভ্যতার আক্রমণে সেই বহুস্রোতা আজ বিলুপ্ত। যাত্রাও নেই আর সেই অভিনেতারাও আজ আর নেই।

লোকশিক্ষার পরিণতি: ধীরে ধীরে পল্লিগীতির স্থানে ধ্বনিত হল স্বদেশ গান। তারপর এল সিনেমা ও পত্রিকার যুগ। এই নব্য সংস্কৃতির ভক্তদল হল স্কুলকলেজের ছাত্রছাত্রী, অফিস-কেরানি ও গৃহস্থ বধূর দল। এভাবেই ভারতের প্রাচীন গণমাধ্যম- যাত্রা, কথকতা, পাঁচালি, ব্রতকথা হল নিশ্চিহ্ন।

লোকশিক্ষার নব-রূপায়ণ: স্বাধীন ভারতে গণমাধ্যমগুলির নব-রূপায়ণের প্রয়োজন হয়। এদেশে দীর্ঘ বিয়াল্লিশ বছর ধরে গণতন্ত্রের চলেছে নানা অগ্নিপরীক্ষা। সেইজন্য গণতন্ত্রের সাফল্যের প্রয়োজনে লোকশিক্ষাকে ও সেই সঙ্গে গণমাধ্যমগুলিকে আরও অনেক শক্তিশালী করার প্রয়োজন হয়।

প্রাচীন লোকশিক্ষার ধারা ও বেতারের আধুনিকীকরণ: সাম্প্রতিক কালে শিক্ষা প্রচারের প্রধান গণমাধ্যম হল বেতার। ১৯৪৭ সালে ভারতে ছিল মাত্র ছয়টি বেতারকেন্দ্র, এখন সে সংখ্যা দাঁড়িয়েছে সত্তরে। কথিকা, বেতার- রূপক ও নাটক বেতারসূচির প্রধান আকর্ষণ। কথকতা, কবিগান, পল্লিগীতি ও যাত্রা আজ আর অবহেলিত নয়, কৃষিকথার আসরও বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেছে। তা ছাড়া বিভিন্ন আঞ্চলিক ভাষায় সংবাদ পরিবেশনেরও ব্যবস্থা রয়েছে।

চলচ্চিত্র ও সংবাদপত্র: গণশিক্ষা ও গণসংযোগের প্রধান বাহন হল সংবাদপত্র। এ ছাড়াও চলচ্চিত্রের ভূমিকাও অসাধারণ, এখানে শিক্ষামূলক এমন অনেক বিষয় থাকে যা শিক্ষাবিস্তারে সহায়তা করে।

দূরদর্শন: গণমাধ্যম রূপে আজ দূরদর্শনের ভূমিকা অপরিমেয়। শাসক শক্তির ভালোমন্দ সকল দিক আজ এই মাধ্যমের সাহায্যে জনসমক্ষে আসছে। দেশ-বিদেশের কৃষি, শিল্প, বাণিজ্য প্রভৃতি সকল ভাবনা এর সাহায্যে জনগণের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। কোনো অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে জনমত গড়ে তোলা এই মাধ্যমে অতি সহজ। এক কথায় এই গণমাধ্যমকে অবলম্বন করে সমগ্র বিশ্ব একসূত্রে বাঁধা থাকে। গণশিক্ষা বিস্তারে দূরদর্শনের ভূমিকা অধিক, কারণ এই মাধ্যমে মূল্যবোধের শিক্ষা, নীতিশিক্ষা, ন্যায়বোধের শিক্ষা যেমন দেওয়া হয়, তেমনই বিজ্ঞান, সাহিত্য প্রভৃতি বিষয়ের শ্রেণিকেন্দ্রিক অগ্রগতিও এর দ্বারা সূচিত হয়। এর দ্বারাই আবার কুইজ-বিতর্ক প্রভৃতি ছাত্রছাত্রীদের মেধাবৃদ্ধি করে।

কম্পিউটার: দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে কম্পিউটারের সাথে তাল মেলাতেই হবে। বর্তমানে এটি মানুষের পরম নির্ভরযোগ্য বন্ধু। উচ্চশিক্ষার প্রসার ঘটানো, শিক্ষাবিস্তারে এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। কম্পিউটার বহু সময়সাপেক্ষ কাজ অল্প সময়ে করে দেয়। ১৯৬ আন

উপসংহার: যুগ প্রয়োজনে গণমাধ্যমগুলোর রূপও বদলে গিয়েছে। আধুনিক রীতি প্রকরণের মাধ্যমে প্রাচীন ঐতিহ্যধারাকে পুনরুজ্জীবিত করে জাতির চেতনা ও সম্ভাবনার শুভ উদ্বোধন ঘটানো যেতে পারে। জাতির বিকাশ ও উন্নতি সাধনে প্রযুক্তি তথা কম্পিউটারের ভূমিকা অনস্বীকার্য।

আরও পড়ুন – ছাত্রজীবন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top