ছোটোগল্প হিসেবে ‘ছুটি’ কতখানি সার্থক হয়ে উঠেছে

ছোটোগল্প হিসেবে সার্থকতা
‘বর্ষাযাপন’ কবিতায় রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ছোটোগল্পের স্বরূপ-বৈশিষ্ট্য সুনিপুণভাবে বিশ্লেষণ করে বলেছেন-
"নাহি বর্ণনার ছটা ঘটনার ঘনঘটা, নাহি তত্ত্ব নাহি উপদেশ অন্তরে অতৃপ্তি র'বে সাঙ্গ করি' মনে হবে শেষ হয়েও হইল না শেষ।”
ব্যঞ্জনা, শিল্প-পরিণতি, কিশোর মনস্তত্ত্ব, নাটকীয়তা, অনুভব -সমস্ত দিক থেকে ‘ছুটি’ সার্থক ছোটোগল্প হয়ে উঠেছে কিনা তা বিচার্য। সাধারণভাবে যে গদ্যকাহিনিতে একটিমাত্র দৃশ্যপট উপস্থাপিত হবে, ঘটনার সংক্ষিপ্ত ও তীব্র বিন্যাস থাকবে, ঘটনাসূত্রের আকস্মিকতায় চরিত্রের চকিত উন্মোচন ঘটবে, থাকবে নাটকীয়তার চমক তাকেই ছোটোগল্প বলা যেতে পারে।
ব্যঞ্জনা : ফটিকের স্নেহপ্রেমহীন বন্দি জীবন থেকে মুক্তি কামনা ও ভাগ্যের পরিহাসে জীবন থেকে ছুটি অর্থাৎ মুক্তিলাভ স্বল্পপরিসরে কাহিনিকে করে তুলেছে ব্যঞ্জনধর্মী।
একমুখী ঘটনা বিন্যাস : গল্পের শেষে-“মা, এখন আমার ছুটি হয়েছে মা, এখন আমি বাড়ি যাচ্ছি”-স্বল্প পরিসরে এই যে ভাবরসের আয়োজন তা আমাদের অন্তরে অতৃপ্তি জাগায়। বালকের অকালমৃত্যু গল্পকে একমুখী অথচ তীব্র ঘটনাবিন্যাসে ছোটোগল্পের সার্থক রূপে উন্নীত করে।