মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব - মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা
মানবজীবনে পরিবেশের প্রভাব – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা
  • মানবজীবনের পরিবেশের পরিচয়
  • প্রাকৃতিক পরিবেশ
  • সামাজিক পরিবেশ
  • সাংস্কৃতিক পরিবেশ
  • পরিবেশ সৃষ্টিতে মানুষের দায়িত্ব
  • ভবিষ্যতের জন্য পরিবেশ সচেতনতা

মানুষ ও প্রকৃতি একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িত। মানুষ জন্মের পর থেকে তার পরিবেশের মধ্যেই বেড়ে ওঠে। পরিবেশকে ঘিরে গড়ে ওঠে শিশুর জীবন। সুষ্ঠ পরিবেশ শিশুকে সুস্থতা প্রদান করে। আবার অসুস্থ পরিবেশ জীবনকে দুর্বিষহ করে। উপযুক্ত পরিবেশ জীবনকে গতিশীল ও কর্মময় করে তোলে।

মানবজীবনের চারিদিকে যা রয়েছে অর্থাৎ যা আমাদের জীবনধারাকে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে নিয়ন্ত্রণ করে, প্রভাবিত করে-তা সবই আমাদের পরিবেশের অন্তর্গত। এই পরিবেশ হতে পারে ভৌত পরিবেশ আবার হতে পারে জৈব পরিবেশও। মানবজীবনকে গতিময় রাখতে এবং পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখতে বন ও প্রাণী সংরক্ষণের গুরুত্ব অপরিসীম। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য যেমন বন ও বন্যপ্রাণীর প্রয়োজন; তেমনই প্রয়োজন উদ্ভিদ, জল, বায়ু, মাটি সব কিছুই। এরা সবাই মিলেই গড়ে তোলে আমাদের পরিবেশকে। মানুষ নিজেকে বিকশিত করে প্রাকৃতিক পরিবেশের আনুকূল্যে। ঋতুপরিবর্তন বা দিনরাত্রির হ্রাসবৃদ্ধি নানাভাবে আমাদের জীবনে প্রভাব ফেলে। অরণ্য, পর্বত, মরুভূমি বা সাগর-নদীর মাধ্যমে আমরা বিভিন্নভাবে প্রভাবিত হই; তা যেমন স্বাস্থ্যের পক্ষে, তেমনই মনোজগতের পক্ষেও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়ায়।

মানুষ সমাজবদ্ধ জীব, সুস্থ সামাজিক পরিবেশ হল প্রতিটি সুস্থ মানুষের কাছে কাম্য। সামাজিক পরিবেশ যত উন্নত হবে সেখানকার জনগণ ততটাই উন্নত ধরনের হবে। তাই সকলকে চেষ্টা করতে হবে সুস্থ সুন্দর স্বাভাবিক সামাজিক পরিবেশে সন্তানদের বড়ো করতে। কারণ সমাজের মধ্যে থেকেই মানুষকে বড়ো হতে হয়। তাই সামাজিক পরিবেশ প্রত্যক্ষ পরোক্ষভাবে মানবজীবনকে ভীষণভাবে প্রভাবিত করে।

সে পরিবেশ থেকে কোনো মানুষ একজন সুসভ্য নাগরিক হয়ে ওঠার প্রেরণা লাভ করে থাকে, তা হল তার সাংস্কৃতিক পরিবেশ। সুস্থ-সুন্দর সাংস্কৃতিক পরিবেশ মানুষের জীবনকে গড়ে দিতে পারে। বিদ্যালয় ও সমাজের সাংস্কৃতিক পরিবেশ শিক্ষার্থীকে সুস্থ সংস্কৃতিসম্পন্ন নাগরিক গড়ে তুলতে সাহায্য করে।

মানবজীবনে দারুণভাবে প্রভাব রাখে পরিবারিক পরিবেশ। পরিবার হল মানুষের প্রাথমিক শিক্ষালয়। পরিবার থেকেই ব্যক্তি তার জীবনকে গড়ে তোলার সম্পদ আহরণ করে। মা-বাবা, পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের কাছ থেকেই শিশু আচার-আচরণ, ন্যায়-অন্যায়, অন্যদের শ্রদ্ধা-ভক্তি করা ইত্যাদি শিক্ষণীয় বিষয়গুলি শেখে। তাই ব্যক্তিজীবনে পারিবারিক পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব বিস্তার করে।

মানুষের জীবনে পরিবেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব রয়েছে। পরিবেশের মধ্যে লুকিয়ে আছে অপার অসীম শুভশক্তি, যার ওপর ভর করে মানুষ তার জীবনকে উন্নত করে তুলতে পারে। তাই মানুষেরও দায়বদ্ধতা থাকে পরিবেশকে সুস্থসুন্দর রাখা। কিন্তু বর্তমানে স্বার্থান্বেষী মনোভাবের কিছু ব্যক্তির জন্য পরিবেশ নিমেষে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়ে যায়। তাই পরিবেশের সুস্থতা বজায় রাখার জন্য সাধারণ জনগণের মধ্যে পরিবেশ চেতনার প্রসার ঘটাতে হবে। যথেচ্ছভাবে গাছ কাটা বন্ধ করতে হবে। বৃক্ষরোপণ বা পরিবেশের সৌন্দর্যায়ন করতে হবে, দূষণমুক্ত রাখার পরিকল্পনাগুলিকে বাস্তবে পরিণত করতে হবে। তাই উপায় সমাজ ও প্রাকৃতিক পরিবেশকে সব দিক থেকে আদর্শ করে গড়ে তুলতে হবে যাতে ভবিষ্যতে শিশুরা সেখানে শান্তির নিশ্বাস ফেলতে পারে।

আরও পড়ুন – ছাত্রজীবন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top