প্রাচীন গ্রিস ও বোমে জ্যোতির্বিদ্যার বিকাশ কীভাবে হয়
অথবা, ইউরোপে প্রাথমিক পর্যায়ের জ্যোতিষচর্চা কেমন ছিল

ইউরোপে প্রাথমিক পর্যায়ে মূলত গ্রিস ও রোমে জ্যোতির্বিদ্যা বিকশিত হয়। আলেকজান্ডার কর্তৃক ব্যাবিলন জয়ের পর গ্রিক জ্যোতিষচর্চায় গতি আসে। অন্যদিকে বলা হয়, গ্রিক দাসদের হাত ধরেই পরবর্তীকালে জ্যোতিষশাস্ত্র প্রবেশ করে রোমে।
প্রাচীন গ্রিসে জ্যোতির্বিদ্যার বিকাশ
ব্যাবিলনের অভিজ্ঞতা থেকে আইওনীয় গ্রিকরা ব্রহ্মাণ্ড ও নক্ষত্র জগতের উন্নত ধারণা গড়ে তোলেন। গ্রিক-ব্যাবিলনীয় জ্যোতির্বিদ্যার সমন্বয় ঘটার দরুন জ্যোতিষশাস্ত্রের পরিধি বিস্তৃত হয় এবং এর সঙ্গে রসায়ন, উদ্ভিদবিদ্যা, জীববিদ্যার মতো বিজ্ঞানের নানান শাখার সংযুক্তি ঘটে। ব্যাবিলনীয় পর্যবেক্ষণকে ব্যবহার করে অ্যানাক্সিম্যান্ডার, হিপার্কাস, টলেমি প্রমুখ ভূকেন্দ্রীয় বিশ্বব্রহ্মান্ডের পরিকল্পনা রচনায় সাফল্য পান। প্রাচীন গ্রিক গণিতবিদ ইউডোেক্সাস (Eudoxus) সম্ভবত প্রথম বৈজ্ঞানিকভাবে গ্রহদের গতিবিধির ব্যাখ্যা প্রদান করেন। তিনি স্ফটিক গোলকের ধারণারও অবতারণা করেন। সম্রাট আলেকজান্ডার নিজেও জ্যোতিষশাস্ত্রের প্রতি আস্থাভাজন ছিলেন।
প্রাচীন রোমে জ্যোতির্বিদ্যার বিকাশ
রোমে জ্যোতিষশাস্ত্র বিকশিত হয় খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতক থেকে খ্রিস্টীয় পঞ্চম শতকের মধ্যে। সেখানকার রাজনীতিবিদ ও প্রশাসকরা ব্যক্তিগতভাবে জ্যোতিষীর কাছ থেকে পরামর্শ চাইতেন। যুদ্ধযাত্রা বা অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ কাজ শুরু করার পূর্বে রানি ক্লিওপেট্রা, মার্ক অ্যান্টনি বা জুলিয়াস সিজারের মতো শাসকেরাও জ্যোতিষীর পরামর্শ নিতেন। তবে পবিত্র রোমান সাম্রাজ্যে ভাঙন দেখা দিলে জ্যোতিষচর্চাও হ্রাস পায়। পরবর্তীকালে খ্রিস্ট ধর্মের প্রচারের সঙ্গে সঙ্গে জ্যোতির্বিদ্যার সমালোচনা হতে থাকে নানাভাবে।