আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতিতে অপরসায়নের গুরুত্ব আলোচনা করো

আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতিতে অপরসায়নের গুরুত্ব আলোচনা করো

আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতিতে অপরসায়নের গুরুত্ব আলোচনা করো
আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতিতে অপরসায়নের গুরুত্ব আলোচনা করো

পঞ্চদশ শতক ছিল ইউরোপে মধ্যযুগের পরিসমাপ্তি ও আধুনিক যুগের সূচনাকাল। তারপর থেকেই অপরসায়ন বিদ্যাচর্চা মানুষের কাছে গুরুত্ব হারায়। এর মূল কারণ হল, আধুনিক রসায়নবিদ্যার প্রতি মানুষের আগ্রহ। তবে আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতিতে অপরসায়নের ভূমিকা ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতিতে অপরসায়নের গুরুত্ব

(1) রাসায়নিক যৌগের আবিষ্কার: অপরসায়নবিদরা নাইট্রিক অ্যাসিড, সাইট্রিক অ্যাসিড, সালফিউরিক অ্যাসিড প্রভৃতি যৌগ আবিষ্কার করেছিলেন।

(2) গবেষণার সরঞ্জামের বিকাশ: বিভিন্ন গবেষণার সরঞ্জাম, যেমন- রেটোর্ট, ফ্লাস্ক, বিকার প্রভৃতি আবিষ্কার করেন অ্যালকেমিস্টরা, যা আধুনিক রসায়ন বা বিজ্ঞানে ব্যবহৃত হয়।

(3) বিভিন্নরকম রাসায়নিক প্রক্রিয়ার আবিষ্কার: অপরসায়নবিদরা পদার্থের বৈশিষ্ট্য নিয়ে পরীক্ষানিরীক্ষা করতেন। তারা খনিজ পদার্থ, মূল্যবান-অমূল্যবান ধাতুর সঙ্গে বিভিন্ন গবেষণার মাধ্যমে পাতন (Distillation), ঊর্ধ্বপাতন (Sublimation) ও দ্রবীভবন (Dissolution) প্রক্রিয়ার আবিষ্কার করেন।

(4) নব চিন্তা-চেতনার বিকাশ: অপরসায়নবিদ্যার সঙ্গে যুক্ত ছিল আধ্যাত্মিক চেতনা। অপরসায়নবিদরা মানবসমাজের মঙ্গলসাধনের উদ্দেশ্যে অলৌকিক শক্তির মাধ্যমে প্রকৃতিকে নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে উৎসাহী ছিলেন। পরবর্তীকালে আধুনিক বিজ্ঞানেরও উদ্দেশ্য ছিল মানবকল্যাণ। তবে আধুনিক বিজ্ঞান যুক্তিবাদ, পরীক্ষানিরীক্ষা ও গবেষণার মাধ্যমে সেই কাজ সম্পাদন করত।

(5) অন্যান্য মৌলিক আবিষ্কার: অ্যালকেমিস্ট বা অপরসায়নবিদরা বারুদ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রেখেছিলেন। আধুনিক কালে চিকিৎসাশাস্ত্রে ব্যবহৃত কেমোথেরাপির ধারণাটিও অপরসায়নবিদদেরই মস্তিষ্কপ্রসূত। অপরসায়ন থেকে আধুনিক বিজ্ঞানে রূপান্তরের প্রক্রিয়া একদিনে সম্পন্ন হয়নি, হয়েছিল অত্যন্ত ধীরগতিতে। তবে একথা সত্য যে, অপরসায়নবিদ্যার সংস্কারের মাধ্যমেই আধুনিক বিজ্ঞানের উন্নতিসাধন সম্ভব হয়েছিল।

আরও পড়ুন – ছাত্রজীবন – মানস মানচিত্র অবলম্বনে প্রবন্ধ রচনা

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top